বিজ্ঞানী দলটির এ-সংক্রান্ত একটি নিবন্ধ ছাপা হয়েছে যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী রয়্যাল সোসাইটি জার্নাল
ইন্টারফেস-এ।
এ পদ্ধতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চালকবিহীন বিমানের (ড্রোন) গতিবিধি পরীক্ষা-নিরীক্ষার বেলায়ও কাজে লাগতে পারে। এতে করে ড্রোনগুলোর উড়ে যাওয়ার সক্ষমতার বিষয়টি মূল্যায়ন করার ক্ষেত্রে গবেষকেরা অনেক দূর এগিয়ে যাবেন বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি উড়ন্ত বস্তুর ভর নিয়ে পদার্থবিজ্ঞানের অন্যতম একটি রহস্যের উত্তর দিয়েছে নতুন যন্ত্রটি।
বিষয়টির ব্যাখ্যা করে বিজ্ঞানী ডেভিড লেনটিং বলেন, পদার্থবিজ্ঞানের একটা বড় ধাঁধা হচ্ছে, উড়ন্ত বস্তুর ভরের বিষয়টি। ধরা যাক, একটি ধারক বা ট্রাকের ভেতরে অনেকগুলো পাখি রয়েছে। সেগুলো থেমে থাকলে ওজন একরকম, আর উড়তে থাকলে ওজন আরেক রকম হবে কি না।
এর আগে মার্কিন টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘মিথ বাস্টারস’-এ উড়ন্ত পাখির ওজন নিয়ে একটি পর্ব সম্প্রচারিত হয়েছিল। সেখানে উপস্থাপকেরা পাখিবোঝাই একটি ট্রেইলারের ওজন পরিমাপ করেন। তাঁরা দেখতে পান, পাখিগুলো উড়ন্ত অবস্থায় ট্রেইলারটির যে ওজন ছিল, থেমে যাওয়ার পরও সেটির একই ওজন ছিল।
তবে স্টান্ডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিষয়টি আসলে তেমন নয়। তাঁদের আবিষ্কৃত যন্ত্রটি দেখিয়ে দিয়েছে, পাখিদের ডানা ঝাপটানোর সঙ্গে সঙ্গে তাদের ধারকের ওজনে হেরফের ঘটে থাকে। এর কারণ ব্যাখ্যা করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা বলছেন, একটি পাখি থেকে পরিমাপ নিয়ে দেখা গেছে, পাখিটি ভাসমান থাকতে ডানা যখন একবার ওপরে আরেকবার নিচের দিকে ওঠা-নামা করায়, তখন শক্তি উৎপাদনের তারতম্য ঘটে। এর সঙ্গে সঙ্গে ওজনেরও তারতম্য হয়।
বিজ্ঞানী ডেভিড লেনটিং বলেন, ‘সুতরাং মাত্র কয়েকটি পাখিবোঝাই একটি ট্রাকের ওজনও সময়ে সময়ে ওঠা-নামা করতে পারে।’ তিনি ও তাঁর গবেষক দলটির সদস্যরা বিশেষভাবে নির্মিত চেম্বারের ভেতরে উড়ন্ত একটি পাখির ডানা থেকে উৎপাদিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শক্তি পরিমাপ করার মাধ্যমে নতুন যন্ত্রটির পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেরেছেন। আর বিষয়টি তুলে ধরতে তাঁরা ‘গাগা’ ও ‘রে’ নামের দুটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় তোতা পাখিকে প্রশিক্ষিত করে তোলেন। পাখি দুটিকে ওই যন্ত্রের ভেতরের একটি বসার দাঁড় থেকে আরেকটি দাঁড়ে উড়ে যাওয়া শেখানো হয়। তখন যে শক্তি উৎপািদত হয়, তার সূক্ষ্ম হিসাব রেকর্ড করেন গবেষকেরা।
অধ্যাপক লেনটিং বলেন, ‘পদ্ধতিটা দ্রুতগতির ও সূক্ষ্ম। এটা পাখি বা ড্রোনগুলো ওড়ার জন্য যে শক্তি উৎপাদন করে থাকে, তা মাপতে আমাদের সাহায্য করে।’ এভাবে খুব নিখুঁতভাবে শক্তি মাপার ফলে গবেষকেরা চেম্বারের ভেতরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ড্রোন ওড়ার সময় সেগুলোর খুঁটিনাটি বিষয় সূক্ষ্মভাবে ঠিকঠাক করে নিতে পারবেন বলে মনে করেন তিনি। বিবিসি

No comments:
Post a Comment